অন্জনা স্টাফ রিপোর্টার- সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্টোররুমে আগুন দিয়েছে দুর্বত্তরা। একইসাথে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মনিরুজ্জানকে দৃর্বৃত্তদের মারপিটে আহত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি কাজিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আগুনে স্টোররুমে রাখা ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রি পুড়ে গেছে। সোমবার(২০ মে) দিবাগত রাত আড়াইটায় এই ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে কাজিপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। আর কাজিপুর থানা পৃুলিশ একই সময়ে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় ডাক্তার মনিরুজ্জানকে উদ্ধার করে।
মঙ্গলবার দুপুরে কাজিপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আহত উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মনিরুজ্জামান জানান, প্রতিদিনের মতো আমি রুমে ঘুমাতে যাই। রাত আড়াইটায় আমার বড় ভাই রুহুল আমিন বাবলু মাস্টার কয়েকজন লোককে নিয়ে আমাকে ডেকে উঠায়। কিছু বুঝে ওঠার পুর্বেই তারা আমাকে মারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা ক্লিনিকের স্টোররুমে আগুন ধরিয়ে দিয়ে আমাকে সেই আগুনে ফেলার চেষ্টা করে। পরে তাদের মধ্যে একজন ফেলতে নিষেধ করলে আমাকে বাইরে ফেলে তারা চলেযায়। তখন আমি চিৎকার শুরু করি। এসময় স্থানীয় লোকজন এসে ফায়ার সার্ভিস এবং কাজিপুর থানাকে ফোন করে।
মনিরুজ্জামানের আরেক ভাই রাশেদুল ইসলাম বাচ্চু জানান, আমার বড় ভাইয়ের সাথে আমাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। অনেকগুলো মামলাও চলমান রয়েছে। মূলত তিনিই আমার ডাক্তার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।
এদিকে মনিরুজ্জামানের বড় ভাই রুহুল আমিন বাবলু জানান, এই ঘটনার সাথে আমি মোটেও সম্পৃক্ত নই। আমি কয়েকদিন যাবৎ বাড়িঘর পাশের চরে স্থানান্তরের কাজ করছি। মূলত পারিবারিক বিরোধেই আমার ভাইয়েরা বারবার আমাকে জড়িয়ে মিথ্যে মামলা করে। এর আগেও তারা আমার নামে অনেকগুলো মামলা করেছেন।
কাজিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, আমরা খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতাবস্থায় মনিরুজ্জানকে উদ্ধার করি। দুপুরেও চিকিৎসাধীন ডাক্তার মনিরুজ্জামানের খোঁজ খবর নিয়েছি। তিনি আমাদের এই ঘটনার জন্য তার বড় ভাই রুহুল আমি বাবলুর সম্পৃক্ততার কথা জানিয়েছেন। এই ঘটনায় এখানো মামলা হয়নি। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
কাজিপুর ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে রাত তিনটায় ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা আগুন নিভিয়ে ফেলি। কিন্তু ততক্ষণে স্টোররুমের সব ওষুধ পুড়ে গেছে। আমাদের গাড়িতেই রাতে আহত মনিরুজ্জামানকে কাজিপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাই।
কাজিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাক্তার মোমেনা পারভীন পারুল জানান, আমরা গত ২৯ এপ্রিল আগামী তিনমাসের প্রায় সাড়ে চারলাখ টাকার ওষুধ ওই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দিয়েছি। সবগুলো ওষুধ পুড়ে গেছে। এই ঘটনা কর্তব্যরত ডাক্তারের পারিবারিক কারণে ঘটেছে কিনা জানিনা। তবে সরকারি স্থাপনায় এমন কান্ড নিন্দনীয়।
সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. রামপদ রায়বলেন, ঘটনাটিতে পেশাদারিদ্বের নয় পারিবারিক। খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply