1. aparadhsangbad@aparadhsangbad.com : অপরাধ সংবাদ : অপরাধ সংবাদ
  2. info@www.aparadhsangbad.com : অপরাধ সংবাদ :
শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
বিজয়নগরের তিন ইউনিয়ন সরাইলে অন্তর্ভুক্তি: সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিতর্কে উত্তাল এলাকাবাসী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, ছিনতাইয়ের অভিযোগ বিজয়নগরে অস্বচ্ছল প্রবাসী পরিবারদের পাশে প্রবাসী কল্যাণ সংগঠন। আওয়ামী লীগের ১৭ বছর আলেম ওলামাগণ নির্যাতনের শিকার ছিলেন- সেলিম রেজা। বিজয়নগরে উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনাল শেষে সবুজ তরুন স্পোর্টিং ক্লাব চ্যাম্পিয়ন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিএনজি ধর্মঘট: দ্বিতীয় দিনেও জনদুর্ভোগ চরমে। কাজিপুরে বিএনপির সদস্য নবায়ন উপলক্ষে আলোচনা সভা বিজয়নগরে কৃতি শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। নেত্রকোণা বারহাট্টা উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান খান রিজভীর ইন্তেকাল। দাউদপুর হাজীপুর সুন্নীয়া আলীয়া মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ, এলাকাবাসীর প্রতিবাদ সভা

বিজয়নগরের তিন ইউনিয়ন সরাইলে অন্তর্ভুক্তি: সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিতর্কে উত্তাল এলাকাবাসী

  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে

আবদুল্লাহ আল হৃদয়ঃ-

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় তীব্র অসন্তোষ ও বিতর্ক দানা বেঁধেছে। উপজেলার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন—চান্দুরা, বুধন্তি ও হরষপুরকে পার্শ্ববর্তী সরাইল উপজেলার সাথে সংযুক্ত করার একটি প্রস্তাবকে ঘিরে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে এই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে, যা বিজয়নগরের অখণ্ডতা এবং উন্নয়নের জন্য হুমকিস্বরূপ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনটি বর্তমানে বিজয়নগর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত। অন্যদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত। প্রস্তাবিত পরিবর্তন কার্যকর হলে বিজয়নগরের এই তিনটি ইউনিয়ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের অন্তর্ভুক্ত হবে। এই খবরে ইউনিয়ন তিনটির ভোটার ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তারা এই প্রস্তাবকে তাদের পরিচয় সংকট এবং উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করার একটি চক্রান্ত হিসেবে দেখছেন।
বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর অভিযোগ, কিছু অসাধু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী, যাদেরকে তারা “গাজা ব্যবসায়ী” এবং “মদ ব্যবসায়ী” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, তথ্য গোপন করে এবং সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে একটি গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে। তাদের দাবি, এই গণস্বাক্ষরের মাধ্যমে ইউনিয়নগুলোর জনগণের প্রকৃত মতামতকে উপেক্ষা করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অনেকেই এই পদক্ষেপকে “বিজয়নগরকে কেজি দরে বিক্রি করে দেওয়ার” শামিল বলে অভিহিত করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চান্দুরা ইউনিয়নের একজন বাসিন্দা বলেন, “আমরা বিজয়নগরের অংশ হিসেবেই থাকতে চাই। আমাদের সকল প্রশাসনিক, সামাজিক এবং পারিবারিক যোগাযোগ বিজয়নগর কেন্দ্রিক। সরাইলের সাথে আমাদের ভৌগোলিক এবং সামাজিক কোনো নৈকট্য নেই। এই সিদ্ধান্ত আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হলে আমরা আমাদের পরিচয় হারাবো এবং উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে পড়বো।”
হরষপুর ইউনিয়নের একজন তরুণ ভোটার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদেরকে রোহিঙ্গা বা ভাড়াটিয়া ভাবার কোনো কারণ নেই। আমরা এই মাটির সন্তান এবং বিজয়নগরের গর্বিত নাগরিক। মুষ্টিমেয় কিছু লোকের স্বার্থে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা আমরা মেনে নেব না।”
এদিকে, নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে এবং এই বিষয়ে দাবি, আপত্তি বা সুপারিশ জানানোর জন্য আগামী ১০ আগস্ট, ২০২৫ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে। “জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১” অনুযায়ী, প্রশাসনিক সুবিধা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং জনসংখ্যার বাস্তব বিভাজনকে সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিজয়নগরের সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নগুলোর বাসিন্দারা এই আইনের ভিত্তিতেই তাদের আপত্তি নির্বাচন কমিশনে দাখিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা আশা করছেন, নির্বাচন কমিশন তাদের আপত্তির যৌক্তিকতা বিচার করে বিজয়নগরের অখণ্ডতা বজায় রাখবে।
আপত্তি জানানোর নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী, সংক্ষুব্ধ বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে ৫ প্রস্থে তাদের লিখিত দাবি, আপত্তি বা সুপারিশ নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হবে। বিজয়নগরের সচেতন নাগরিক সমাজ এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন একযোগে এই প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তাদের বিশ্বাস, যথাযথভাবে তথ্য-উপাত্তসহ আপত্তি উপস্থাপন করা হলে এই “অযৌক্তিক” প্রস্তাব বাতিল হতে বাধ্য।
এই বিষয়ে কোনো রাজনৈতিক নেতার আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া না গেলেও, স্থানীয় পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষের আশঙ্কা, এই ধরনের একটি বিভাজনমূলক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে তা এলাকার সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করবে এবং বিজয়নগরের সামগ্রিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে। এখন দেখার বিষয়, নির্বাচন কমিশন গণমানুষের এই দাবি এবং প্রতিবাদের মুখে কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট