
প্রায় দেড় যুগ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত জনগণের সামনে নতুন করে গণতন্ত্রের দরজা খুলে যাচ্ছে—এমন মন্তব্য করে আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে রাজনৈতিক ঐক্যের ওপর জোর দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, জনগণ দীর্ঘদিন পর সৎ, অবাধ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে ভোট দিতে মুখিয়ে আছে, আর এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দলগুলোর অযৌক্তিক ভাঙ্গন জাতিকে ভয়াবহ বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
ড. ইউনূস বলেন,
“আগামী ফেব্রুয়ারিতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে অভ্যুত্থানের স্বপক্ষের রাজনৈতিক দলগুলিকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তা না হলে জাতি এক মহাবিপদের সম্মুখীন হবে।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী অভ্যুত্থানে দেশের মানুষ যে সাহস, ঐক্য ও আত্মত্যাগ দেখিয়েছে, তা যেন স্বল্প ভিন্নমত বা দলীয় বিবাদে নষ্ট না হয়।
“জুলাই অভ্যুত্থানে ১৩৩ শিশু, শত শত তরুণ-তরুণী ও নারী-পুরুষের মৃত্যু এবং হাজারো অঙ্গহানির স্মৃতি আমাদের দায়িত্ববোধ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে,”—তিনি বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষুদ্র স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিলে দেশ একটি উৎসবমুখর নির্বাচনের দিকে এগোতে পারবে।
“আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার দ্বারপ্রান্তে। এখন আর বিভক্তির সুযোগ নেই; সহিষ্ণুতা ও সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
তার ভাষণে তিনি স্পষ্ট করেন, দেশের মানুষ যা চাইছে তা খুব সাধারণ—শান্তি, সহিষ্ণুতা, এবং গণহত্যার স্মৃতির প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা রেখে একটি ন্যায়সঙ্গত নির্বাচন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাজনৈতিক দলগুলো এই আহ্বানকে সম্মান জানাবে এবং জাতিকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেবে না।