আবদুল্লাহ আল হৃদয়ঃ-
সারা দেশে যখন শোকের আবহ, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখে চলছে রাষ্ট্রীয় শোক পালন, তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে দেখা গেল এক ভিন্ন ও উদ্বেগজনক চিত্র। রাষ্ট্রীয় শোক দিবসে প্রতিষ্ঠানটির আঙ্গিনায় উত্তোলনই করা হয়নি জাতীয় পতাকা। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র সমালোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গত ২১শে জুলাই (সোমবার) ঢাকার দিয়াবাড়ি মাইলস্টোন বিদ্যালয়ে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় ২২শে জুলাই (মঙ্গলবার) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে সরকার। এই উপলক্ষে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশনা জারি করা হয়। এমনকি, ওই দিনের নির্ধারিত এইচএসসি পরীক্ষাও স্থগিত করে শিক্ষা বোর্ড।
কিন্তু সরকারের এই নির্দেশনাকে উপেক্ষা করা হয়েছে চম্পকনগর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কোনো পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। শিক্ষক-কর্মচারীদেরও অধিকাংশ অনুপস্থিত ছিলেন। একই ক্যাম্পাসে অবস্থিত চম্পকনগর ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষ সরকারি নির্দেশনা মেনে যথারীতি শোক পালন করলেও সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র ছিল স্কুল শাখায়।
বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। দুপুর ১টার দিকে তড়িঘড়ি করে নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন করা হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, জহিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমার বিদ্যালয়ের দপ্তরি সবুজ মিয়াকে পতাকা উত্তোলনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল কিন্তু সে কোনো কারণে আসতে পারেনি।” তিনি আরও যোগ করেন, পরীক্ষা স্থগিতের কথাও সময়মতো জানতে না পেরে আমরা দুপুর ২টায় পরীক্ষা ডিউটিতে এসেছি।
এই অবহেলার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বিজয়নগর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুরুল আমিন। তিনি বলেন, “এটা ভুলবশত হয়ে গেছে।”
একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় শোকের দিনে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডে এলাকার সচেতন মহল হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সরকারের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরেও কেন এমন ঘটনা ঘটলো এবং এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে আছেন সকলে।
Leave a Reply