নেত্রকোনা প্রতিনিধি
নেত্রকোণা কেন্দুয়া উপজেলার সাউধপাড়া মোড় এলাকায় জমি দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত আটজন আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় রোয়াইলবাড়ি আমতলা গ্রামের আলম (৩৫) নামে একজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম জানা যায়নি। তবে বাকি আহতরা কেন্দুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
১০ মে, শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সাউধপাড়া মোড় সংলগ্ন সিরাজ মিয়ার বাড়ির দখল নিতে গেলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের মধ্যে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধের সূত্রপাত প্রায় চার দশক আগে থেকে। ১৯৮৭ সালে রোয়াইলবাড়ি গ্রামের আবুল হাসেম মিয়ার ছেলে মুফতী ফাহিম বিল্লাহর বাড়িটি ভাড়া নেন সিরাজ মিয়া ও তার পরিবার। এরপর দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির দখল না ছাড়ায় বাড়ির মালিক পক্ষ বিভিন্ন সময় সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে।
সিরাজ মিয়ার পরিবারের দাবি, তারা এ জায়গাটি ক্রয় সূত্রে মালিক হয়েছেন। অন্যদিকে বাড়ির মালিক ফাহিম বিল্লাহর ভাই ও চিরাং বাজার বণিক সমিতির সভাপতি কবির হোসেন জানায়, সিরাজ মিয়া ভাড়াটিয়া ছিলো। পরে জালিয়াতির মাধ্যমে বাড়ির মালিকানা দাবি করতে থাকেন। তৎকালীন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের যোগসাজশে বাড়িটি দখল করে রাখে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ এপ্রিল উপজেলা বিএনপি অফিসে দুই পক্ষের উপস্থিতিতে একটি সালিশি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিরাজ মিয়ার পক্ষকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে বাড়ি খালি করার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় শনিবার সকালে মুফতী ফাহিম বিল্লাহ বাড়ির দখল নিতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
জমি সংক্রান্ত বিষয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করে কেন্দুয়া থানায় ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, ঘটনস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কয়েকজন আহত হলেও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। তবে একজনের হাতের অবস্থা গুরুতর থাকায় মমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply