আবদুল্লাহ আল হৃদয়ঃ-
এক সময়ের জমজমাট চান্দুরা বাজারের ঐতিহ্য এখন বিলুপ্তির পথে। জরাজীর্ণ পুরাতন ভূমি অফিস এবং স্থানান্তরিত পোস্ট অফিসের সরকারি জায়গা বেদখল হয়ে যাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের হাতে। প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে এই দখলের মহোৎসব, যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়নের চান্দুরা বাজারে পুরাতন ভূমি অফিসটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। ভূমি অফিসের সরকারি জায়গার দাগ নং ৬৯৪৮। বিগত দিনে চান্দুরা বাজার ছিল এক জমজমাট বাণিজ্যিক কেন্দ্র, কিন্তু বর্তমানে তা নামকাওয়াস্তে বাজারে পরিণত হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভূমি অফিসটি দীর্ঘদিন পূর্বে চান্দুরা বাজার থেকে সরিয়ে বুধন্তী এলাকায় নিয়ে যায় সরকার। এরপর থেকে ভূমি অফিসের বিশাল সরকারি জায়গাটি খালি পড়ে থাকে। এই সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা একে একে জায়গা দখল করে দালান নির্মাণ শুরু করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চান্দুরা এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, চান্দুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান মেম্বার ভূমি অফিসের জায়গা দখলের চেষ্টা করছেন। শুধু ভূমি অফিসের জায়গা নয়, চান্দুরা বাজারে অবস্থিত পোস্ট অফিসের জায়গাটিও স্থানান্তরিত হওয়ার পর থেকে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি দখল করে নিচ্ছে। পোস্ট অফিসটি বাজারের প্রবেশ পথে সরকারি জায়গায় স্থাপন করা হলেও তার আশপাশের জায়গাও বেদখল হয়ে যাচ্ছে।
এলাকাবাসী আরও জানান, কিছুদিন পূর্বে শামসুজ্জামান মেম্বার যখন ভূমি অফিসের জায়গায় নির্মাণ কাজ শুরু করেন, তখন উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়। ফলে কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকে। কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসনের সেই বাধাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গতকাল থেকে শামসুজ্জামান মেম্বার আবারও নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে এলাকাবাসী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা দ্রুত এই অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধ করে সরকারি সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন। একই সাথে, চান্দুরা বাজারের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
চান্দুরা বাজারের সরকারি সম্পত্তি দখলের এই ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। তারা চান্দুরা বাজারের অতীত গৌরব ফিরিয়ে আনতে এবং সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।