পাথরঘাটা (বরগুনা) সংবাদদাতা :- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একটি হলে শিক্ষার্থীদের পিটুনিতে নিহত মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের জানাজা শেষে বরগুনার পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। মা, বাবা আর ভাইয়ের কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন তিনি। আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় কাঁঠালতলী তালিমুল কোরআন মাদ্রাসা মাঠে তোফাজ্জলের জানাজা শেষে যখন দাফন চলছিল, ঠিক তখনই এলাকাবাসী এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন। এ সময় কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয়রা বলেন, তোফাজ্জল খুবই হাসি–খুশি লোক ছিলেন। তাঁকে কখনো কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে কেউ দেখেনি। মানসিক ভারসাম্যহীন হলেও সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতেন। দেশের সর্বোচ্চ একটা বিদ্যাপীঠে এমন নৃশংস ঘটতে পারে এটি ভেবে সবাই অবাক হচ্ছেন। তাঁরা বলেন, চুরি যদিও করেও থাকে, সে জন্য তো আইন আছে। সামান্য কয়েক টাকার মোবাইলের জন্য এভাবে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা তাঁরা মেনে নিতে পারছেন না।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এনামুল হোসাইন বলেন, ‘দুই রাত ঘুমাতে পারিনি, শুধু চোখের সামনে ভাত খাওয়ার দৃশ্যটা ভেসে ওঠে! তোফাজ্জলকে আমি নিজের অর্থ দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। এরপর ও ভাইয়ের মৃত্যুর পর আবার অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। ও আমার কোনো নিকটাত্মীয় নয়, তবুও ওর জন্য মায়া লাগে। এ রকম একটা কাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হবে—তা ভাবা যায় না।’ তোফাজ্জলের স্কুলশিক্ষক গোলাম মাওলা মিলন বলেন, ‘স্কুলজীবন থেকেই তোফাজ্জল খুব মেধাবী এবং শান্ত স্বভাবের ছিলেন। আমরা হত্যাকারীদের বিচার চাই এবং তার সঙ্গে যারা তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন করেছে, তাদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তোফাজ্জলের মামাতো বোন তানিয়া বলেন, ‘আমি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। তারা পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করে দোষ এড়ানোর জন্য মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত করলে মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে।’ জুমার নামাজের পর পাথরঘাটা গোলচত্বরে তোফাজ্জল হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধন করে পাথরঘাটা স্টুডেন্ট সোসাইটি। এ ছাড়া তোফাজ্জল হত্যার বিচার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ঢাকায় অধ্যয়নরত পাথরঘাটার শিক্ষার্থীরা ও বিকেলে বিএম কলেজ প্রধান ফটকে মানববন্ধন করেন পাথরঘাটাস্থ বরিশালের শিক্ষার্থীরা।ছবি:-সংগৃহীত
Leave a Reply