আবদুল্লাহ আল হৃদয়ঃ-
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় শারদীয় দুর্গাপূজা শেষে আনন্দ-উল্লাসের রাতেই ঘটে গেলো এক মর্মান্তিক ঘটনা। গোপন মদের আসরে অংশ নিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন দুই জন—মৃত কোকিল মালাকারের ছেলে শ্রীনিবাস মালাকার (৭৫) ও সুতাংসু দাসের ছেলে সৌরভ দাস (২৩)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন অজিত মালাকার (৩৫) ও সুমন মালাকার (২৭) ও জন্টু মালাকার (৪৪)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে কয়েকজন মিলে আনন্দ আড্ডায় বসেন। পরবর্তীতে তারা স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা মদ্যপান করেন। রাত গভীর হতেই শরীর খারাপ হতে শুরু করে সবার। ভোরের দিকে অবস্থার অবনতি হলে এলাকাবাসী তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক শ্রীনিবাস ও সৌরভকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর অসুস্থ সুমন ও জন্টুকে দ্রুত ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অপরাধ সংবাদকে জানান—“ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, বিষাক্ত মদ্যপানের কারণেই মৃত্যু হয়েছে। তবে মদের উৎস কোথা থেকে এবং কারা এর সঙ্গে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এলাকার জনপ্রতিনিধি ও পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতারা জানান, দুর্গাপূজার মতো আনন্দমুখর উৎসব শেষে এমন মৃত্যুর ঘটনায় গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তারা বলেন, “এ ধরনের অবৈধ মদের ব্যবসা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হতে হবে। পাশাপাশি সচেতনতা বাড়ানোও জরুরি।”
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিম্নমানের ও ভেজাল অ্যালকোহল সেবন করলে তা মুহূর্তেই প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। তারা জানান, “বাংলাদেশে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ভেজাল মদ সরবরাহ হচ্ছে। প্রশাসনিক নজরদারি না বাড়ালে এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটতে পারে।”
শারদীয় দুর্গাপূজার উৎসব শেষে আনন্দ আড্ডা যে শোকের আবহে পরিণত হলো, তা পুরো বিজয়নগরবাসীকে নাড়া দিয়েছে। শ্রীনিবাস ও সৌরভের অকাল মৃত্যুতে তাদের পরিবারে চলছে আহাজারি। আহত দুইজনের জীবন বাঁচাতে চলছে চিকিৎসকদের প্রাণপণ চেষ্টা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ জসীম উদ্দীন খোকন
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২৮/বি টয়েনবি সার্কুলারর রোড, মতিঝিল বা/এ ,ঢাকা -১০০০
মোবাইল: ০১৭১১৭৮৫৯৯৮, ০১৭৩৩৭০২৮৬৩
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত