দ্বীপক চন্দ্র সরকার,
নেত্রকোণা কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের বেজগাতি কুন্ডলী গ্রামে বিষক্রিয়ায় প্রাণ গেছে দরিদ্র খামারি সন্তোষ মিয়ার প্রায় বারোশো হাঁস। এতে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ক্ষতিগ্রস্থ হন খামারী।
জানা যায়, বাড়ির আঙিনা ও চারপাশে সারি সারি হাঁসের বাচ্চা মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। চোখের পানি মুছতে মুছতে সন্তোষ মিয়া জানান, প্রতিদিনের মতো ভোর ৬টার দিকে হাঁসগুলো তিনি বিলে ছেড়ে দিয়ে আসে। কিন্তু আজ ঘটল অন্যটা পানিতে নামার সঙ্গে সঙ্গেই হাঁসের বাচ্চাগুলো মারা যেতে শুরু করে। অবাক ও দুঃখ ভারাক্রান্ত অবস্থায় বুঝতে পারছিলনা কি করবে? তবে তার ধারণা, বিলের পানিতে কেউ বিষ প্রয়োগ করেছে।
৮ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে কেন্দুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ক্ষতিগ্রস্থ খামারি সন্তোষ মিয়া। খবর পেয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সন্তোষ মিয়া জানায়, অন্যের জমিতে চাষাবাদ এবং হাঁস পালন করে জীবিকা নির্বাহ করে। গত মাসে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে দুই হাজার একশো হাঁসের বাচ্চা কিনে খামার শুরু করে খামারী সন্তোষ মিয়া। এর মধ্যে এক হাজার দুইশো হাঁস মারা যাওয়ায় প্রায় আড়াই লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এছাড়া খাদ্যের দোকানে এখনো ৪০ হাজার টাকা বাকি রয়েছে। দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে শাস্তি ও তার ক্ষতিপূরনের দাবী জানায় ও সরকারের আর্থিক সহায়তা কামনা করেন দরিদ্র খামারী সন্তোষ মিয়া।
বিলের জমির মালিক মুসলেম উদ্দিন জানায়, সন্তোষ দরিদ্র মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে আমার জমিতে হাঁস পালন করছে। আমরাও তাকে উৎসাহ দিয়ে থাকি। তবে আজকের এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার পেছনে কারা জড়িত, তা আমাদের জানা নেই। কেন্দুয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সাখাওয়াত হোসেন তারিক জানায়, প্রাথমিক পরীক্ষায় হাঁসগুলো ভাইরাসে আক্রান্ত মনে হয়নি। বিষক্রিয়ায় মারা গেছে বলে ধারণা করছি। মৃত হাঁসের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠিয়েছি। রিপোর্ট এলে সঠিক কারণ জানা যাবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আর্থিক অনুদান বিষয়ে তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়ে সরাসরি অনুদান দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। তবে জেলা পর্যায়ে আবেদন করলে তিনি সহযোগিতা পেতে পারবেন।
কেন্দুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমরা তদন্ত শুরু করেছি এবং সত্য উদঘাটনে চেষ্টা করা হচ্ছে।
Leave a Reply