অন্জনা স্টাফ রিপোর্টার- বাতিল হয়েছে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা পরিষদ আদর্শ একাডেমির নির্মাণ কাজের টেন্ডার। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পেয়ে দীর্ঘ দুই বছরে শুধু প্রতিষ্ঠানের পূর্বের টিনশেড বিল্ডিং ভেঙ্গে এবং মাটি খোড়াখুড়ি করে তা প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় স্তূপ করে রেখেছে। এতে করে বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম ভেস্ত যেতে বসেছে। এদিকে দীর্ঘদিনেও উদ্ভুত পরিস্থিতির উত্তরণ না ঘটায় অনেক অভিভাবক তার সন্তানদের এরইমধ্যে এই বিদ্যালয় থেকে সরে নিয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের অসহনীয় পরিবেশ আর ক্লাসরুম সংকট মোকাবেলা করে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত শিক্ষকগণ।
জানা গেছে, কাজিপুর উপজেলায় কর্মরত অফিসার ও আশেপাশে বসবাসকারিদের সন্তানদের পড়ালেখার জন্য উপজেলা পরিষদের প্রাণকেন্দ্রে ১৯৯৭ সালে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। শুরু থেকেই বিদ্যালয়টির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। শিক্ষকদের বেতন ও শিক্ষার্থীদের পুরস্কার ও অন্যান্য খরচাদির ব্যয় একটি পরিচালনা কমিটি নিয়মানুযায়ী বহন করে আসছে। ক্রমান্বয়ে এই বিদ্যালয়ের সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। উপজেলা পর্যায়ে সরকারি দিবসগুলোতে নজরকাড়া ডিসপ্লেসহ একাডেমিকভাবে ভালো ফলাফলের কারণে প্রতিষ্ঠানটি সবার দৃষ্টি কেড়েছে। ২০২১ সালে ৯ জুন রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড বিদ্যালয়টিকে একাডেমিক পাঠদানের স্বীকৃতি দেয়। একই বছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর বিদ্যালয়টির জন্য চারতলা ভিতরে উপর একটি একতলা ভবন নির্মাণের জন্য ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেন। একই বছরের ৫ ডিসেম্বর ভবন নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়। এতে কাজ পান কাজিপুরের স্থানীয় ঠিকাদার মেসার্স হৃদয় তৃপ্তি ট্রেডার্স। ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল ১ বছরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার কার্যাদেশ পেলেও ওই ঠিকাদার কাজ শুরু না করে তালবাহানা করতে থাকেন। এরপর স্থানীয়ভাবে চাপ দেবার কারণে ঠিকাদার ওই বছরের শেষের দিকে আগের ভবনটি ভেঙ্গে ফেলেন এবং নতুন ভবন নির্মাণের জন্য খোড়াখুড়ি করেন। কিছু ইট ও বালু এনে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে জড়ো করে রাখেন। এই পর্যন্তই তিনি কাজ করেছেন। এরপর ওই ঠিকাদারকে বারবার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে ভবন নির্মাণের জন্য তাগাদা দিলেও কোন কাজ হয়নি।
প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান জানান, এবছর এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পাসসহ ভালো ফলাফল করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ভবন সংকটের কারণে আমাদের পাঠদান কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে মেসার্স হৃদয় তৃপ্তি ট্রেডার্সের মালিক জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার ফোন করলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান জানান, ওই ঠিকাদারকে একাধিকবার কাজ শেষ করতে নোর্টিশ দিয়েছি। কিন্তু তিনি কাজ শেষ করতে পারেননি। এদিকে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ফলে আমরা নতুন করে টেন্ডারের প্রক্রিয়া করেছি। এমাসে, নয়তো আগামী মাসেই নতুন করে বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণের টেন্ডার হয়ে যাবে।
Leave a Reply